১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গোলাপগঞ্জে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছাড়তে বাধ্য পরিবার

admin
প্রকাশিত মার্চ ৯, ২০২৫, ০২:২৯ অপরাহ্ণ
গোলাপগঞ্জে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছাড়তে বাধ্য পরিবার

Manual5 Ad Code

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি:

Manual7 Ad Code

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শেখপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার ও তার ছোট বোন ফারেহা জান্নাতের বাডিতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।

Manual3 Ad Code

গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে সংগঠিত এই হামলায় তাদের পারিবারিক বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলার ফলে পরিবারের সদস্যদের চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে এবং তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা যায়, দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গুজবকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামাতপন্থী সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের টার্গেট করে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি গুজবের পরদিন, অস্ত্রধারী একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে হামলা চালায় শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বাড়িতে।

হামলার সময় শাফিনা আক্তার বাড়িতে না থাকলেও সন্ত্রাসীরা ঘরে ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ভাঙচুর ও লুট করে। পাশাপাশি, তাদের মালিকানাধীন ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও সমন্বিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা।

শাফিনা আক্তারের মা ও ছোট বোন ফারেহা জান্নাত সাংবাদিকদের জানান, “আমরা শুধুমাত্র আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই বারবার হামলার শিকার হচ্ছি। এখন প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে যেতে হয়েছে আমাদের।”

Manual3 Ad Code

হামলার আরও একটি ভয়াবহ দিক হচ্ছে, স্থানীয় এক ধর্মীয় উগ্রপন্থী নেতার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতকে জোরপূর্বক বিয়ের হুমকি দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়ে বলছে, “তাদের আমাদের হাতে তুলে দাও, না হলে দেশেই থাকতে দেবো না—মেরে ফেলবো।”

শাফিনা আক্তারের চাচাতো ভাই মাহিন আহমেদ জানান, তিনি একাধিকবার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা তো মেলেইনি, উল্টো তাকে হুমকি দেওয়া হয়। মাহিন বলেন, “পুলিশ কর্মকর্তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—‘তোমার চাচাতো বোন শাফিনা আক্তারের নামে আটটি মামলা রয়েছে, চারটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তার বোন ফারেহা জান্নাতের বিরুদ্ধেও ছয়টি মামলা ও চারটি ওয়ারেন্ট আছে। আমরা তাদের যেখানেই পাবো গ্রেপ্তার করে আজীবনের জন্য জেলে ঢুকিয়ে দেব। তোমাকেও মামলায় জড়ানো হবে।’”

এই হুমকির ফলে মাহিন আহমেদ ও তার পরিবারও নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে করে পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “প্রশাসনের নিরবতা গোটা অঞ্চলকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

এ দিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, এবং ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।

তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নামে সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে এই ধরনের বর্বরতা বন্ধ করতে হবে।

Manual1 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code