স্টাফ রিপোর্ট:
গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের আমকোনায় জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মালিক সেজে ভূমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায়
ভুক্তভোগীরা সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত -২ এ জড়িতদের আসামী করে একটি মামলা (সি আর মামলা নং-১৭০/২০২৩ইং) দায়ের করা হয়। এই মামলাটি ইতিমধ্যেই বিচারের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
গত ১৬ এপ্রিল (বুধবার) এই মামলার চার্জ গঠন থেকে অভিযুক্ত আসামীরা অব্যাহতির জন্য অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সিলেটে একটি আবেদন করেন। মহামান্য আদালত যাছাই বাছাই করে বাদী পক্ষের কাগজাদি এবং পিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে তাদের এই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর আসামীরা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে জেলা জজের আদালতে আপিল করলে জেলা জজ আদালতও তাদের আপিল খারিজ করে দেন।
এরপর আসামীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে জেলা জজের আদালতে আপিল করে। তাদের এই আপিলও খারিজ হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত সিলেটের পিপি আশিক উদ্দিন আশুক।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী ভুক্তভোগী মো: রুমেল আহমদ জানান, আমাদের এই মামলা প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা আশাবাদী মহামান্য আদালতের মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার পাবো। ইতিমধ্যেই আসামীরা অভিযোগ থেকে খালাসের জন্য আবেদন করেছিল। আদালত পিবিআই এর রিপোর্ট এবং আমাদের কাগজপত্র দেখে তাদের খালাসের আবেদন খারিজ করে দেন।
তিনি আরো বলেন, এই জায়গার প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিক আমার পিতা মৃত সহির উদ্দিন, মৃত আছমারুন নেছা ও প্রবাসী চাম্পারুন নেছা। আমার পিতা সহির উদ্দিন ২০১৯সালের ২৪ ডিসেম্বর মারা গেছেন। এর আগে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই আছমারুন নেছাও মারা গিয়েছিলেন। এছাড়াও অন্য মালিক চাম্পারুন নেছা এখনো বিদেশে অবস্থান করছেন। এই জালিয়াত চক্রটি মূলত আমাদের জায়গাটি অবৈধভাবে দখল ও হাতিয়ে নিতেই এই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। আমরা ওই জালিয়াত চক্তের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাচ্ছি।
এই মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়নের আমকোনা গ্রামের মো: রুমেল আহমদ গংদের জায়গা একই গ্রামের মৃত হাবিব আলীর পুত্র মুহিবুর রহমান (৬২) ও মৃত আব্দুল আব্দুল মুছব্বিরের পুত্র মুজিবুর রহমান (৫২) আমকোনা মৌজার এস এ জে এল নং-৭১, বিএস জেএল নং-৭০ স্থিত জায়গায় মালিক না থাকা সত্ত্বেও জালিয়াতির মাধ্যমে মৌরসী মালিক দাবি করে একই গ্রামের মৃত লকুছ মিয়ার স্ত্রীর দিলারা বেগমের সাথে বিক্রয় কবালা (দলিল নং-৩৫১৬/২০২০) সম্পাদন করেন।
এরপর দিলারা বেগম জায়গা নামজারি করতে উল্লেখিত ভূমির প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিক মৃত সহির উদ্দিন, মৃত আছমারুন নেছা ও প্রবাসী চাম্পারুন নেছাকে বিক্রেতা সাজাইয়া একই গ্রামের মৃত সইব উদ্দিনের ছেলে খুরশেদ আলম ও আব্দুল মতিনের ছেলে মুজিবুর রহমানকে স্বাক্ষী ও সৈয়দুর রহমানের পুত্র নিয়াজ মাহবুবকে সনাক্তকারী করে এবং একই ইউনিয়নের বাগলা গ্রামের দলিল লেখক আরমিছুর রহমানকে দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে ভূয়া ও জাল দলিল তৈরী করে নামজারির জন্য দরখাস্ত করেন।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই রুমেল আহমদ গংরা নম্বরের (দলিল নং-৩৫১৬/২০২০) দলিলটির জাবেদা নকল সিলেট সাব রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সংগ্রহ করলে দেখা যায় ওই দলিলের বিক্রেতা মুহিবুর রহমান ও মুজিবুর রহমান। কিন্তু জায়গাটি নামজারির জন্য ভূয়া ও জাল দলিল তৈরী করে দরখাস্তে দাখিল করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই জায়গার বিক্রেতা মুহিবুর। রহমান ও মুজিবুর রহমান মালিকই নয়।