১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গোলাপগঞ্জে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ
গোলাপগঞ্জে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা

Manual2 Ad Code

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি:

Manual7 Ad Code

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শেখপুর গ্রামে আওয়ামী লীগপন্থী রাজনৈতিক পরিবারের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাফিনা আক্তার এবং তার ছোট বোন ফারেহা জান্নাত। এ ঘটনায় পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং পরিকল্পিত হামলা:

স্থানীয় সূত্র এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা যায়, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গুজবকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামাতপন্থী সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি গুজব ছড়ানোর পরদিন, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় অস্ত্রধারী একদল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে হামলা চালায় শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বসতবাড়িতে।

Manual8 Ad Code

বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব:

হামলার সময় শাফিনা আক্তার বাড়িতে না থাকলেও সন্ত্রাসীরা তাদের ঘরে ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিকস পণ্য ও ব্যক্তিগত মালামাল ভাঙচুর ও লুট করে। এছাড়াও, ওই পরিবারের মালিকানাধীন ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একযোগে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। দুর্বৃত্তদের এই তাণ্ডবে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলে পরিবারের দাবি।

শাফিনা আক্তারের মা ও ছোট বোন ফারেহা জান্নাত বলেন, “আমরা শুধুমাত্র আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই বারবার এই হামলার টার্গেট হচ্ছি। আমাদের বেঁচে থাকারই সুযোগ নেই—এখন প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে থাকতে হচ্ছে।”

জবরদস্তিমূলক বিয়ের হুমকি:

হামলার চরম অমানবিক দিক হলো—স্থানীয় এক ধর্মীয় উগ্রপন্থী ব্যক্তির নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতকে জোরপূর্বক বিয়ের হুমকি দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলছে, “তাদের আমাদের হাতে তুলে দাও, না হলে দেশেই থাকতে দেবো না—মেরে ফেলবো।” এমন হুমকির ফলে পরিবারটি শুধুমাত্র ভয়ে নয়, সম্মান রক্ষার লড়াইতেও আজ বিপর্যস্ত।

পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ:

Manual2 Ad Code

শাফিনা আক্তারের চাচাতো ভাই মাহিন আহমেদ জানান, তিনি একাধিকবার গোলাপগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা তো পাওয়া যায়নি, বরং পুলিশ কর্তারা তাকে হুমকি দেন। মাহিন বলেন, “পুলিশ কর্মকর্তা বলেন—‘তোমার চাচাতো বোন শাফিনার নামে আটটি মামলা ও চারটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তার বোন ফারেহার বিরুদ্ধেও ছয়টি মামলা ও চারটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। আমরা তাদের যেখানেই পাবো গ্রেপ্তার করবো। তোমাকেও মামলায় জড়ানো হবে।’”

এ ধরনের ভয়ভীতি ও হয়রানির ফলে মাহিন আহমেদসহ পুরো পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।

প্রশাসনের নিরবতা ও জনমনে ক্ষোভ:

সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এলাকাবাসী বলছেন, “প্রশাসনের নিরব ভূমিকা আমাদের হতাশ করেছে। এটি গোটা অঞ্চলকে চরম অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

Manual3 Ad Code

সচেতন মহলের দাবি:

সচেতন নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এই হামলা শুধু একটি পরিবারের ওপর নয়—এটি রাজনৈতিক সহিংসতার একটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া এই ধরনের বর্বরতা রোধ করা সম্ভব নয়। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন, পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছেন।

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code