১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গোলাপগঞ্জে রাজনৈতিক হামলার ঘটনায় পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন ফারেহা জান্নাত

admin
প্রকাশিত মে ২৪, ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ
গোলাপগঞ্জে রাজনৈতিক হামলার ঘটনায় পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন ফারেহা জান্নাত

Manual2 Ad Code

২১ মে লন্ডন পাড়ি, প্রশাসনের নিরবতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

Manual8 Ad Code

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শেখপুর গ্রামে বিএনপি-জামাতপন্থী সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী হামলার পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের নেত্রী শাফিনা আক্তার ও তার ছোট বোন ফারেহা জান্নাত চরম নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়েন। এই পরিস্থিতির জেরে আত্মগোপনে থাকা ফারেহা জান্নাত অবশেষে ২১ মে ২০২৫, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যান। পরিবার ও ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এটাই তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছে।

পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন ফারেহা জান্নাত

শাফিনা আক্তার ও ফারেহা জান্নাতের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। পুলিশের নজরদারিতে থাকায় ফারেহাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। কোথায় ছিলেন তিনি, কার আশ্রয়ে ছিলেন—তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ছিল নানা জল্পনা-কল্পনা। অবশেষে জানা যায়, চাচাতো ভাই মাহিন আহমেদের সহায়তায় শাফিনা আক্তারের আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। পরে প্রাণরক্ষার তাগিদে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান।

সন্ত্রাসী হামলা ও লক্ষ্যমাত্রা ছিল রাজনৈতিক পরিচয়

হামলার সময় শাফিনা আক্তার বাড়িতে না থাকলেও সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে তাদের পারিবারিক বাড়ি ও মালিকানাধীন ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী এবং ব্যক্তিগত মালামাল ভাঙচুর ও লুট করে। পরিবারটির দাবি—এতে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে।

Manual3 Ad Code

শাফিনা আক্তারের মা ও ফারেহা জান্নাত বলেন, “আমরা শুধুমাত্র আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই বারবার হামলার টার্গেট হচ্ছি। দেশে আমাদের বেঁচে থাকারই কোনো সুযোগ নেই। এই কারণে প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে।”

জবরদস্তিমূলক বিয়ের হুমকি: চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন

স্থানীয় এক ধর্মীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হুমকি দেয় যে, শাফিনা ও ফারেহাকে তাদের হাতে তুলে না দিলে তাদের মেরে ফেলা হবে। এমনকি জোরপূর্বক বিয়ে করার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারটির জন্য এ হুমকি শুধু প্রাণনাশের নয়, সামাজিকভাবে চরম অসম্মানের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ, হুমকির শিকার পরিবার

Manual8 Ad Code

শাফিনা আক্তারের চাচাতো ভাই মাহিন আহমেদ জানান, গোলাপগঞ্জ থানায় একাধিকবার অভিযোগ জানাতে গিয়ে তিনি পুলিশি হুমকির মুখে পড়েন। মাহিন বলেন, “পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে—শাফিনার নামে ৮টি মামলা ও ৪টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, ফারেহার নামে ৬টি মামলা ও ৪টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। যেখানেই পাব, গ্রেপ্তার করব। এমনকি আমাকে পর্যন্ত মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়েছে।” এর ফলে তিনিসহ পরিবারের আরও সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন।

Manual6 Ad Code

নিরব প্রশাসন, আতঙ্কিত জনপদ

ঘটনার প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত বা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ—“সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে তাণ্ডব চালালেও প্রশাসনের নিরবতা গোটা জনপদকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

সচেতন মহলের আহ্বান

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এই হামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আইনশৃঙ্খলার চরম ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে একটি পরিবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে—এটা কোনো স্বাধীন দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার, নিরপেক্ষ তদন্ত ও ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code