সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেট শহরে চাঞ্চল্যকর একটি অপহরণ ঘটনার শিকার হয়েছেন সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার এক যুবক, জাকির উদ্দিন (২৪)। অভিযোগ উঠেছে, জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট একটি চক্র তাকে অপহরণ করে নির্জন স্থানে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে অজ্ঞান, আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন এবং তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা আশঙ্কাজনক না হলেও অস্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জাকির উদ্দিন সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ফুলবাড়ি গ্রামের মইজ উদ্দিনের ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুলাই (বুধবার) সকাল বেলা জাকির বন্ধুদের সাথে সিলেট শহরে আসেন ব্যক্তিগত কাজে ও মার্কেটিং করার জন্য। সন্ধ্যার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের মধ্যে খোঁজ নিতে থাকেন। কোথাও কোনো খোঁজ না পেয়ে পরদিন ০৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন জাকির উদ্দিনের বাবা মইজ উদ্দিন।
পরদিন, ০৮ জুলাই (শুক্রবার) সিলেট শহরের বড়ইকান্দি এলাকার সুরমা নদীর পাড়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি অচেতন ও আহত অবস্থায় জাকির উদ্দিনকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষণিকভাবে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে এবং সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শরীরে চোটের চিহ্ন এবং মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাথমিকভাবে জাকির উদ্দিন জানান, সেদিন তিনি তার বন্ধুদের সাথে মার্কেটিং শেষে একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সিলেট কদমতলী এলাকায় পৌঁছানোর পর হঠাৎ অজ্ঞাতপরিচয় ৪/৫ জন ব্যক্তি তার সামনে এসে মুখে অজ্ঞান করার স্প্রে প্রয়োগ করে। এরপর আর কিছুই মনে নেই। জ্ঞান ফেরার পর তিনি নিজেকে একটি অচেনা ঘরের মধ্যে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। অপহরণকারীরা তাকে প্রচন্ড ভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছে।
জাকির উদ্দিন আরও দাবি করেন, অপহরণকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন এবং তারা জামায়াত-শিবির সমর্থিত রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। অপহরণের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে, ৮ জুলাই (শুক্রবার) একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে জাকিরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং জানানো হয় যে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবার হাসপাতালে ছুটে যান এবং ছেলেকে আহত অবস্থায় দেখতে পান।
জাকির উদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনায় আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়।