১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

গোলাপগঞ্জে ৫০ বছরের পুরাতন মসজিদের নাম জোরপূর্বক পরিবর্তনের চেষ্টা

admin
প্রকাশিত জুলাই ১০, ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ণ
গোলাপগঞ্জে ৫০ বছরের পুরাতন মসজিদের নাম জোরপূর্বক পরিবর্তনের চেষ্টা

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি:

গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা গ্রামে ৫০ বছরের পুরাতন বাদেপাশা জামে মসজিদ ( পূর্ব নাম বাদেপাশা উত্তরহাটি পাঞ্জেগানা মসজিদ) এর নাম জোরপূর্বক ব্যক্তির নামে ” বাদেপাশা শেখ নিদাই জামে মসজিদ” নামে পরিবর্তনের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে এলাকায় বড় ধরনের ধাঙ্গা-হাঙ্গামার আশংকা করা হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন এলাকার সাধারণ মুসল্লিরা। তারা কোথায় নামাজ আদায় করবেন সেটি নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়। অপরদিকে ভুমিদাতারা ৫০ বছরের এই মসজিদ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। বিষয়টি আইন শৃংখলা বাহিনীকে নজর দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বাদেপাশা গ্রামের শেখ নিদাই সমাজ কল্যাণ সংস্থার একটি চিহ্নিত মহল যাতে নাম পরিবর্তন করতে না পারেন সেই জন্য স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনায় মসজিদের ভুমি দাতার পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মোঃ লতিফুর রহমান ,সত্ত্ব মামলা নং ৫৭/২০২৪ ইংরেজি।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী বাদেপাশা গ্রামের মোঃ লতিফুর রহমানের পিতা ডা:মোহাম্মদ আলী জীবিত থাকা অবস্থায় বাদেপাশা গ্রামে উত্তর হাটির মুসল্লিয়ানগণের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ নির্মাণ করার জন্য তিনি তার মৌরসী সম্পত্তি থেকে
১৯৭৭ সালের ২৭ জুন সম্পাদিত ৪৬৫০/১৯৭৭ইং নম্বর ওয়াকফনামা দলিল মূলে “বাদেপাশা উত্তরহাটি পাঞ্জেগানা মসজিদ” এর মোতাওয়াল্লি বরাবরে এস.এ. ১১৭ ও ২৫৩ খতিয়ানের এস.এ. ৯২ দাগে ০.০৪ একর ভূমি দান করেন । এরপর থেকেই এই নামেই এ মসজিদটি পরিচালনা হয়ে আসছিল।

মসজিদ নির্মাণের পর্যায় ক্রমে মুসল্লি সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জিনের সম্মানী সহ আনুষাঙ্গিক খরচাপাতি বৃদ্ধি পায়।

এসব সার্বিক দিক বিবেচনা করে সকল মুসল্লিদের সাথে পরামর্শ করে বাদী মোঃ লতিফুর রহমান গং যৌথ ভাবে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ ১৪০৬/২০২২ইং নম্বর দলিল মূলে বি.এস. ১২২০ খতিয়ানের বি.এস. ৫১৮০ দাগে ০.২২৬৪ একর ভূমি “বাদেপাশা জামে মসজিদ” এর নাম বরাবরে হস্তান্তর করেন।

একই ভাবে ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই মোঃ লতিফুর রহমান এবং ওবায়দুর রহমান যৌথ ভাবে ২৪৮৫/২০২৩ইং নম্বর সাফ কবালা দলিল মূলে বি.এস. ৩৭৯ খতিয়ানের ২৭ দাগে ০.০০৮৫ একর ভূমি “বাদেপাশা জামে মসজিদ” বরাবরে হস্তান্তর করেন।

এই দলিলে সুষ্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, মসজিদের দাতা পরিবারের সদস্যদের লিখিত অনুমতি ব্যতিত বর্ণিত মসজিদের নাম পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন করা যাবেনা।

এরপরেও মসজিদের পরিচালনা কমিটি সহ একটি শক্তিশালী মহল শেখ নিদাই নামে মসজিদের নামকরণে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তারা মসজিদের সাধারণ মুসল্লি ও ভুমিদাতাগণের মতামতের কোন তোয়াক্কা না করে তাদের খেয়াল খুশিমতো ব্যক্তির নামে মসজিদের নামকরণ করার সর্বাত্বক চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে করে এলাকায় বড় ধরনের বিশৃংখলার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী মোঃ লতিফুর রহমান জানান, মসজিদ আল্লার ঘর। এটা কারো ব্যক্তির নামে হওয়া উচিত নয়। মসজিদে সবাই দান খয়রাত করবে। আমরা ভূমি দাতারাও মসজিদ কারো ব্যক্তি নামে চাই না,সাধারণ মুসল্লিরাও চাচ্ছেনা কিন্তু একটি পক্ষ এলাকায় বিশৃংখলা সৃষ্টির জন্য মসজিদের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা এই ব্যাপারে আদালতে মামলা করেছি যাতে মসজিদের নাম কেউ পরিবর্তন করতে না পারে।