- ডেস্ক রিপোর্ট ::
সিলেটের গোলাপগঞ্জে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে একই পরিবারের মহিলা সহ- ৪ জন কে কারাদণ্ড দেওয়ায় গোলাপগঞ্জের এসি ল্যান্ড সহ- ৫ জনকে শোকজ করেছে সিনিয়র সহকারী জজ গোলাপগঞ্জ আদালত সিলেট। বাকি ৪ জন হলেন, জেলা প্রশাসক সিলেট, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( রাজস্ব) সিলেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাপগঞ্জ, সহকারী ভূমি অফিসার ফুলবাড়ী ইউনিয়ন।
জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট (বুধবার) সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে গোলাপগঞ্জের ঘোষগাঁও গ্রামে একই পরিবারের এক নারী সহ ৪জনকে ১৫ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও আর্থিক জরিমানা করেন গোলাপগঞ্জের এসি ল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ। পর দিন ২৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সিলেট জেলা ম্যজিস্ট্রেট বরাবরে ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদের রায় বাতিল ও জামিন চেয়ে আপীল মামলা দায়ের করেন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা (আপীল মামলা নং ০৪/২০২৫) ।
উক্ত ঘটনা নিয়ে নালিশা ভূমির মূল মালিক রিয়াদ আহমদ চৌধুরী গত ০৩ সেপ্টেম্বর (বুধবার ) সিনিয়র সহকারী জজ গোলাপগঞ্জ আদালতে এসি ল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ সহ- পাঁচ জনকে বিবাদী করিয়া নিষেধাজ্ঞার মামলা (মামলা নাম্বার :১০৩/২০২৫) দায়ের করিলে, আদালত বিবাদীগনকে আগামী ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর নির্দেশ দিয়ে শোকজ করেন।
আরও জানা যায়, এই ঘটনার নেপথ্যে গোলাপগঞ্জ ভুমি অফিসের তহশীলদার নজরুল ইসলামের চক্রান্ত ও যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবী ঐ পরিবারের। আপীল মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নালিশা ভূমির মূল মালিক জনৈক রিয়াদ আহমদ চৌধুরী গং। ২০২৩ সালের ৮ জুন রিয়াদ আহমদ চৌধুরী চেরাগ আলী ও তার অপর দুই ভাইদেরকে নালিশা ভূমি দেখাশুনা সহ মামলা মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে বিশেষ আমমোক্তার নামা সম্পাদন করেন ( সিরিয়াল নং- ০২)। এর আগে ২০১৩ সালে রিয়াদ আহমদ চৌধুরী গং উক্ত নালিশা ভূমি নিয়ে সিলেটের সিনিয়র সহকারী জজ (গোলাপগঞ্জ) আদালতে তৎকালীন জেলা প্রশাসককে (রাষ্ট্রপক্ষ) বিবাদী করে স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন (মামলা নং ১৪৭/২০২১ )। ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল সিনিয়র সহকারী জজ গোলাপগঞ্জ আদালত উক্ত মামলায় বাদী রিয়াদ আহমদ চৌধুরী গং এর পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রদান করেন। আমমোক্তার গ্রহীতা ও ভ্রাম্যমান আদলাতে সাজা প্রাপ্ত আসামীগণের দাবী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায়ের বলে বৈধভাবে নালিশা ভূমিতে শাস্তি পূর্ণভাবে ভোগ দখলে আছেন ।
গত ২৭ আগষ্ট উক্ত এলাকার তহসিলদার নজরুল ইসলাম ভুক্তভোগীদের প্রতিপক্ষদের সাথে নিয়ে নালিশা ভূমিতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভু্ক্তভোগী পরিবারকে জড়িয়ে একটি ঘটনা সৃষ্টি করেন। প্রতিপক্ষের সাথে মিলে তহশীলদার নজরুল ইসলাম এসিল্যান্ডকে নিয়ে এই পরিদর্শন নাটক সাজান বলে দাবী করেন তারা। প্রতিপক্ষদের সাথে নিয়ে এসিল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ ও তহশীলদার নজরুল ইসলাম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও বেআইনী ও অন্যায় ভাবে আপীলকারীগনকে ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে যান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে এসিল্যান্ড ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ জানান, আদালত থেকে আমার কাছে কোনো নোটিশ আসে নি। আমি শোকজের বিষয়ে কিছু জানি না আপনার মাধ্যমে জানলাম, আপনাকে ধন্যবাদ। মহামান্য আদালত থেকে নোটিশ আসলে আমি রেসপন্স করব।
মামলার বাদী রিয়াদ আহমদ চৌধুরী জানান, আমি গত ৩ সেপ্টেম্বর আমার নিযুক্তিয় আইনজীবীর মাধ্যমে সিনিয়র সহকারী জজ গোলাপগঞ্জ আদালতে ১০৩/২৫ নং মামলা দায়ের করলে আদালত গোলাপগঞ্জের এসি ল্যান্ড সহ ৫জন সরকারি কর্মকর্তাকে শোকজ করেন।