১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ ১ জুলাই, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত অভিযাত্রা শুরু

admin
প্রকাশিত জুলাই ১, ২০২৫, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ
আজ ১ জুলাই, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত অভিযাত্রা শুরু

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"effects":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

Manual1 Ad Code

জুলাই ১: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত অভিযাত্রার সূচনা 

Manual5 Ad Code

আজ ১লা জুলাই। ২০২৪ সালের এ দিনে সূচনা হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত অভিযাত্রা। যার ওপর ভর করে এগোয় ফ্যাসিস্ট পতনের অভ্যুত্থান। রক্তগঙ্গা পেরিয়ে তৈরি হয় স্বৈরাচারের করুণ পরিণতি। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা রক্তাক্ত এ আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে। গৌরবময় এ আন্দোলনের সেই গৌরব কতটুকু অক্ষুন্ন রাখতে পেরেছেন বিপ্লবীরা? চরম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্য ধরে রেখে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ঐকমত্যে জোর বিশ্লেষকদের। 
স্বাধীনতা পরবর্তীতে দেশে বেশ কয়েকবার মাথাচাড়া দেয় স্বৈরাচার। সব স্বৈরাচারের রেকর্ড ভেঙে দেয় শেখ হাসিনার টানা প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন। বিরোধীমতকে নিশ্চিহ্ন করাই ছিলো যে ফ্যাসিস্টের মূলমন্ত্র।

তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর অনাস্থার কারণেই বাড়তে থাকে ব্যক্তি পর্যায়ের আন্দোলন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুকলেই দেখা যেত অনিয়ম, দুর্নীতি আর সমাজের নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধে মানুষের ঘৃণা-ক্ষোভের প্রকাশ। আওয়াজ ওঠে সমাজ বদলের। তবে সত্যিকারের দেশপ্রেমিকরাই রাজপথে এসে কথা বলেন সংকটের। পথ দেখান সংকট উত্তরণের।
ব্যক্তি পর্যায়ে অভিনব আন্দোলন ছিলো দৃশ্যমান। অভাব ছিলো সম্মিলিত আন্দোলনের। অবশেষে সেই তৃষ্ণা মেটে ১ জুলাই। কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে চার দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের লাগাতার কর্মসূচি। ২ থেকে ৬ জুলাই দেশে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, অবরোধসহ দ্রোহের আগুন। আসে বাংলা ব্লকেডের মতো কর্মসূচি। এই কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে ছাত্রলীগ ও পুলিশের পেটোয়া বাহিনী। ১৪ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এদিনই তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতি-পুতি নামে তাচ্ছিল্য করেন। তাতে আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢালার অবস্থা হয়।   
১৫ জুলাই সরকার প্রধানের সেই তীর্যক বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। ১৬ তারিখ আরো তেজি হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সেদিনই পুলিশের গুলিতে শহিদ হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আবু সাইদ।
এরপর কমপ্লিট শাটডাউনের সাথে চলে সর্বাত্মক অবরোধ। এরইমধ্যে আটক করা হয়, অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে। সরকারের তিন প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে উঠে আসে আট দফা। পরে দফা কমিয়ে ২২ জুলাই নাহিদ চার দফা দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দেন ৪৮ ঘন্টার। যেখানে ইন্টারনেট চালু, ক্যাম্পাস থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাস চালু এবং কারফিউ প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। ততক্ষণে আন্দোলনে ঝরে যায় অসংখ্য প্রাণ। আহত অগনিত। তাদের তালিকা তৈরি ও হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করার দাবি ওঠে ২৫ জুলাই। ২৬ জুলাই নাহিদ ইসলামসহ তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারীরা। ২৭ তারিখে আরো দুই সমন্বয়ককে হেফাজতে নেয় ডিবি।  ২৮ তারিখ রাতে তাদেরকে জাতির সামনে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। এরইমধ্যে সারাদেশের দেয়াল ছেয়ে যায় আন্দোলনের গ্রাফিতিতে। 
হত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে ৩১ জুলাই সারাদেশে পালন হয় ‘মার্চ ফর জাস্টিস’। ১ আগস্ট ছেড়ে দেওয়া হয় গোয়েন্দা হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ককে। ২ আগস্ট শুক্রবার সারাদেশে চলে প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল। ৩ তারিখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাখো জনতার জমায়েত। সেখান থেকেই আসে অসহযোগ আন্দোলনের রুপরেখা। সেদিনই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ঘোষণা আসে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের। সেই উত্তাল আগস্টে চারদিক থেকে যখন লাশের খবরে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আসে, তখনই ৬ আগস্ট লং মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় একদিন এগিয়ে ৫ আগস্টেই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আসে। বলা হয়ে থাকে, সেই ঘোষণাই ফ্যাসিস্টের মসনদ চূর্ণ করার চূড়ান্ত ঘোষণা। যে ডাকে রাত থেকেই কারফিউ ভেঙে ঢাকার দিকে ছোটে জনতার ঢেউ। 
সেদিন যেনো ভোরের আলো ফুটতেও বিলম্ব হচ্ছিল। রাজধানী ঢাকায় তৈরি হয় এক গুমোট পরিবেশ। যা রোখা অসাধ্য হয়ে যায় ফ্যাসিস্টের পক্ষে। খবর ছড়িয়ে পড়ে, সকল দাম্ভিকতার অবসান ঘটিয়ে, নিজের জীবন বাঁচাতে ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে প্রতিবেশি দেশে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর।  

Manual2 Ad Code

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code