ডেস্ক রিপোর্ট::
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে গতবছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তবে এ পতনের ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কৌশল নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে দলটি।
দলটির বক্তব্য হচ্ছে, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে।
একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ আরও ভরসা করছে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার ওপর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ সরকারের ব্যর্থতা দলটির রাজনীতিতে ফেরার পথ সহজ করছে বলে এর নেতাদের অনেকে বলছেন।
তবে জুলাই—অগাস্টের আন্দোলনে দমননীতি চালানো ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের অনুশোচনা প্রকাশের কোনো ইঙ্গিত এখনো নেই। এ নিয়ে রাজনীতিতে সমালোচনা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন—সাড়ে পনেরো বছরের দীর্ঘ শাসনামলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অহংকারে রাজনীতি বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো এবং এমনকি সাধারণ মানুষকেও ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। দলটি একা হয়ে পড়েছিল। খবর বিবিসি বাংলার।
বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থেকে দলকে দেশের ভেতরে সক্রিয় করা সম্ভব কি না, আওয়ামী লীগের ভেতরেই এই প্রশ্ন ছিল।
এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঢাকায় দলকে সংগঠিত করার জন্য লোক খুঁজেছিল দলটি। কিন্তু কেউ সাহস দেখাননি।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ২৮ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিল করলো পাবিপ্রবিনিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ২৮ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিল করলো পাবিপ্রবি
বিশ্লেষকেরা মনে করেন—আওয়ামী লীগের শাসনে দুর্নীতির মাত্রাও ছিল ব্যাপক। সেকারণেও দলটির কেউ দেশের ভেতরে হাল ধরতে এগিয়ে আসার সাহস পাননি।
তবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন—এক বছর ধরে ভারতে অবস্থান করেই শেখ হাসিনা জেলা-উপজেলা এবং এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ রেখেছেন। ভার্চুয়ালি অনেক বৈঠকও করেছেন।এখন সেই যোগাযোগ আরও বেড়েছে।
বর্তমানে দলটির অন্যতম একজন মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন মাহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যোগাযোগ বেড়েছে।’
তিনি দাবি করেছেন—তাদের দল এখন অনেক বেশি সংগঠিত হয়েছে।
গত মাসে গণঅভ্যত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে যে হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন—গোপালগঞ্জে তাদের দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়েছিল গড়েছিল। যা তাদের মনোবল বাড়িয়েছে।
কিন্তু সেই ঘটনার পর গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগকেও ক্র্যাকডাউনের মুখে পড়তে হয়েছে। সেখানে ১৩টি মামলায় ১৫ হাজারের বেশি আসামি করে গ্রেফতার অভিযান চালানো হয়েছে।
অবশ্য দেশের অন্য এলাকায় গোপালগঞ্জের মতো শক্তি দেখানোর মতো সাংগঠনিক অবস্থা এমুহূর্তে দলটির নেই।
দলটির নেতারাও বলছেন—এখন তারা শক্তি ক্ষয় করতে চান না। তারা নিজেরা আরও সংগঠিত হয়ে সুযোগ বুঝে মাঠের রাজনীতিতে অবস্থান তৈরির চেষ্টা চালাবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সমর্থন পেতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ বেশ তৎপর।