২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি ভারতে গ্রেপ্তার

admin
প্রকাশিত আগস্ট ২৪, ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ণ
আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি ভারতে গ্রেপ্তার

ডেস্ক রিপোর্ট::
আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী কমিশনার (এএসপি) মো. আরিফুজ্জামান অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় আরিফুজ্জামান পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার অন্তর্গত এলাকার অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় হাকিমপুর সীমান্ত চৌকিতে টহলরত বিএসএফ’এর ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সদস্যরা তাকে আটক করেন। এরপর শুরু হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ। পরে রাতেই তাকে স্বরূপনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় মো. আরিফুজ্জামানের কাছ থেকে বেশ কিছু পরিচয়পত্র, সরকারি নথি উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ। তার বাড়ি বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার শাহীপাড়া এলাকায়।

আরিফুজ্জামান ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় অবস্থিত এপিবিএন-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার পদে কর্মরত ছিলেন। গত ১৪ অক্টোবর থেকে তিনি বিনা অনুমতিতে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং সেই থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।

এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় এএসপি আরিফুজ্জামানকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। বিএসএফ ও স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকেও গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়।

আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৪ (এ) ফরেনার্স আইন এবং ভারতীয় পাসপোর্ট আইনে (১২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ রবিবার কড়া নিরাপত্তায় তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে নেওয়া হলে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের (জেলহাজতে) নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আবু সাঈদ। ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। ছাত্রদের সবাই সরে গেলেও আবু সাঈদ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে যান। এই অবস্থায় ৫০ ফুট দূর থেকে পুলিশ তার ওপর ছররা গুলি ছোড়ে। পুলিশের অবস্থানের জায়গাটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। তারপরও অবস্থান থেকে সরেননি আবু সাঈদ। একপর্যায়ে কয়েকটি গুলি লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।

৪৮ বছর বয়সী আরিফুজ্জামান রংপুর মহানগর পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এএসপি) পদে কর্মরত ছিলেন। শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরই গা ঢাকা দেন আরিফুজ্জামান। নিজের কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে সম্প্রতি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। জানা যায়, এ সময় সাতক্ষীরা এলাকায় আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।