ডেস্ক রিপোর্ট ::: শারদীয় দুর্গোৎসবপ্রসঙ্গে বিভিন্ন প্রতিমায় দেবী-দেবতার সঙ্গে সযত্নে শোভিত হয়ে থাকে। কিন্তু এবারের দুর্গোৎসবে পশ্চিমবঙ্গের এক প্রতিমা তৈরির ঘটনাই সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে সেখানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসকে ‘অসুর’(ভিলেন) হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার সকালে ওই ছবি প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে কেন ভারতের কালিাতেই এক ব্যক্তিকে অসুর রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে; বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রতিফলন কী এবং দু’দেশীয় সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে। এক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে, প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্র যখন এধরণের উপস্থাপনা করে, তারা মনে করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরোধিতাই করছে। ফলে, তাদের চোখে বাংলাদেশ এখন ‘অসুর’ রূপেই বিবেচিত হচ্ছে এবং যে সব বাংলাদেশি অতীতে সেখানে ব্যবসা বা কেনাকাটা করতে যেত, তারা এখন যেতে অনিচ্ছুক এমন একটি মনোভাবও দেখা যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
তবে একই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেন যে, এ ধরনের আচরণ থাকলেও দুই দেশের সরকারি স্বরকারে সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন না; ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল এই প্রদর্শনকে সমালোচনাযোগ্য দাবি করে সম্পর্ককে আলাদা রাখা সম্ভব হবে বলে তার অভিমত। তিনি বলেন, সমালোচনা হচ্ছে, কিন্তু রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক “ভঙ্গুর” বা স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়নি।
এ ঘটনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি রাজনৈতিক সংগঠন কড়া প্রতিবাদ জানায়। ওই সংগঠনের নেতারা বলেন ধর্মীয় অনুভূতিকে কুদ্রভাবে আঘাত করেছে এই কর্মকাণ্ড; শাস্ত্রীয় বিধান ও ধর্মকে অবমাননা করেছে; তারা এটি ‘জঘন্যতম অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করে এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করছে।
একই সময় একটি রাজনৈতিক নেতা প্রশ্ন তোলেন ডক্টর ইউনুস কোনওভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করেননি, তবুও কেন তাঁকে এ রকমভাবে উপস্থাপন করা হলো? তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রতিবাদ করলে বাংলাদেশের জনগণও প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এতে দু’দেশীয় সৌহার্দ্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি এবং বিকৃত উপস্থাপনকারীদের ক্ষমা চাইতে বলতেও অনুরোধ করেছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন যে, ভারতের কিছু অংশে এমন আচরণ হলেও তা দুই দেশের সরকার পর্যায়ের সম্পর্ককে স্থিতিশীল রাখার পথে বাধা সৃষ্টি করবে না তবে ব্যক্তি-ভিত্তিক বিকৃত উপস্থাপন সম্মানজনক নয় এবং এ ধরণের কাজ বন্ধ হওয়া উচিত।
বার্তা বিভাগ / সহযোগী সংবাদ